ভাষা শহীদদের রক্তের পবিত্রতা রক্ষায় বাংলা ভাষাকে ভিনদেশী আগ্রাসনমুক্ত করার আহবান জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ। তিনি বলেন, তিক্ত হলেও সত্য যে, লক্ষ্য চেতনা ও আবেগ নিয়ে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল। মায়ের ভাষাকে সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করতেই তারা বাংলার দামাল ছেলেরা জীবনের মায়া উপেক্ষা করে হায়েনাদের বুলেটের সামনে নিজেদের বক্ষকে উন্মোচিত করে দিয়েছিল। বাংলা ১৩৫৯ সালের ৮ ফালগুন থেকে অদ্য পর্যন্ত ৬৭ বছর পরও ভাষা আন্দোলনের সে চেতনার প্রতিফলন তথা মাতৃভাষা বাংলার ব্যবহার সর্বস্তরে প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি। মনে হচ্ছে বাংলা ভাষার প্রতি নতুন প্রজন্মের সেই ভালোবাসা নেই। হিন্দি সিনেমা ও সিরিয়াল দেখে শিশুরা হিন্দি কথা বলতে অভ্যস্ত হয়ে যাচ্ছে। উচ্চবিত্তরা তাদের সন্তানদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। এটিকে অনেকে এক ধরণের আভিজাত্য বলে মনে করছেন। বাংলা ভাষার প্রতি এ যুলুম সত্যিই বড় নিষ্ঠুর। বাংলাভাষার প্রতি এ অসদাচরণ বন্ধ করা এখন সময়ে দাবী। রাষ্ট্রকে এর দায় ও দায়িত্ব নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
২১ ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শনিবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (আইএবি) এর পুরানা পল্টনস্থ মিলনায়তনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত ইসলামে মাতৃভাষা শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, আলহাজ্ব আব্দুল আওয়াল মজুমদার প্রমূখ।
অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, বাংলার আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়ে ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’ শ্লোগানে মুখরিত করে তুলেছিল রাজপথ। এই দূর্বার আন্দোলনে শামিল হয়ে জীবন উৎসর্গ করেন এদেশের বহু ছাত্র-জনতা। অথচ এখনো আমাদের আদালতে দাড়িয়ে বিচারপতিকে সম্বোধন করা হয় ‘মাই লর্ড’ বলে। ভিনদেশী ভাষা আজ ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে রাখতে হবে, ইসলামও মাতৃভাষার প্রতি যত্মবান হওয়ার প্রতি অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছে। নবীজি আ. বলেছেন, আমি আরবে মধে সবচেয়ে বেশি বিশুদ্ধভাষী। তাঁর মাতৃভাষার বিশুদ্ধতার জন্য তাকে শিশুকালে শহর ছেড়ে গ্রামে রেখে আসা হয়। কাজেই এতো কিছুর পরও বাংলা ভাষার প্রতি এ রকম উদাসীনতা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা এবং ভাষা শহীদের আত্মত্যাগকে অবমূল্যায়ন করার শামিল। সভায় মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার লড়াইয়ে শাহাদাৎবরণ করেছেন তাদের রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা হয়। – প্রেস বিজ্ঞপ্তি