কুড়িগ্রামে কৃষকের আশার আলো কমিউনিটি, ভাসমান বীজতলা

তিন দফা বন্যায় কুড়িগ্রামে আমন বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর জমি তৈরি, বীজ সংগ্রহ ও বপনে বাড়তি অর্থ ব্যয় নিয়ে যখন কৃষক দিশেহারা তখন তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে সরকারি উদ্যোগে ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিউনিটি বীজতলা, ভাসমান বীজতলা ও বাড়ির ভেতর প্লেট পদ্ধতিতে বীজতলা। সরকারি প্রণোদনায় এসব বীজ বিনামূল্যে পেয়ে নতুন উদ্যোমে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, চলতি বছর দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় কুড়িগ্রামে ১৭ হাজার হেক্টর জমির ফসল বিনষ্ট হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ১ লাখ ৩৫ হাজার কৃষক। সরকারিভাবে কৃষিতে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২৫ হাজার ৮১০ জন কৃষকের আমন বীজতলার ক্ষতি হয়েছে ১ হাজার ৪০৯ হেক্টর জমিতে। আমন বীজতলার ঘাটতি মোকাবিলায় সরকারিভাবে ১০৫টি কমিউনিটি বীজতলা, ১১২টি ট্রে বীজতলা এবং শতাধিক ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে ২১ হাজার কৃষক বিনামূল্যে ২০ হাজার ৯২২ বিঘা জমিতে আমন চাষ করার সুযোগ পাচ্ছেন।
জেলায় এবার ১ লাখ ১৫ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ৯৪ হাজার ৫৩৫ হেক্টর। আমন বীজতলার লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৩ হেক্টর হলেও বিভিন্ন প্রণোদনা দিয়ে আমন বীজতলা তৈরি করায় ৭ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।
বন্যার ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে কৃষক বাড়ির উঠোনে উঁচু জায়গায় প্লেট পদ্ধতিতে আমনের চারা লাগানোর অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরে খুশি। এছাড়াও শেলফ বা তাক পদ্ধতির মাধ্যমেও কৃষক আমনের বীজতলার ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে পারে বলে জানায় জেলা কৃষি বিভাগ।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান বলেন, ‘আমন আবাদ যাতে বিঘ্নিত না হয় এ জন্য বন্যা পরবর্তী কৃষি পুনর্বাসন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। চলতি বছর জেলায় আমন চারার ঘাটতি মোকাবিলায় ১০৫টি কমিউনিটি বীজতলা, ১১২টি ট্রে বীজতলা এবং শতাধিক ভাসমান বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। যা বিনামূল্যে কৃষকের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে।’ – UNB