গ্যারান্টি ও আর্বিট্রেশন ক্লজসহ গঙ্গার অববাহিকা ভিত্তিক ব্যবস্থাপনা দাবি

নিউ ইয়র্ক, এপ্রিল ০৭ – চুক্তি অনুযায়ী ফারাক্কা থেকে গঙ্গার পানি না পাওয়ার ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশনে প্রতিপক্ষের কাছে বাংলাদেশে পক্ষ থেকে যে চিঠি দেয়া হয়েছে সে প্রেক্ষিতে ৬ এপ্রিল শনিবার নিউ ইয়র্ক, জেকশন-হাইটসে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি, নিউ ইয়র্ক ইনক-এর এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ত্ব করেন আইএফসি’র চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু। সপভা পরিচালনা করেন মহা-সচিব সৈয়দ টিপু সুলতান। বক্তব্য রাখেন সিনিয়র যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ হোসেন খান, সহ-সভাপতি আলী ইমাম শিকদার, বিশিষ্ট সাংবাদিক মইনুদ্দিন নাসের, কমিউনিটি নেতা আবু তালিব চৌধুরী চান্দু, কাজী আজম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনি এসোসিয়েসনের নেতা তাজুল ইসলাম, এক্টিভিষ্ট খঃ ফরহাদ, এডভোকেট মূনীর হোসেন ও মাক্সুদুল হক চৌধুরী প্রমূখ।
সভায় গঙ্গায় ক্রমাগত প্রবাহ হ্রাসে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, ২০২৬ সালে গঙ্গা পানিবন্টন চুক্তির ৩০ বছর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গ্যারান্টি ও আর্বিট্রেশন ক্লজসহ নতুন চুক্তির মাধ্যমে নদীর অবহাহিকা ভিত্তিক সুষম ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করে উৎসমুখ থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। কারন ইতোপূর্বে স্বাক্ষরিত চুক্তির ক্ষেত্রে ফারাক্কা পয়েন্টে পানি আসার পূর্বেই উজেনে পানি প্রত্যাহারের ফলে গঙ্গার প্রবাহ ক্রমাগতভাবে কমে যায়।
নদীকে তার উৎস মুখ থেকে সাগর পর্যন্ত প্রবাহমান রাখার জন্য দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এখন থেকেই জোরদার করতে হবে। ভারত বাংলাদেশ উভয় দেশের স্বার্থেই যৌথ নদীগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। ড্যাম ও ব্যারেজ নির্ভর পানি ব্যবস্থাপনার জন্য ভারতের অভ্যন্তরে সবারমাটি নদী শুকিয়ে গেছে। কাবেরি নদী নিয়ে কর্নাটক ও তামিল নাড়ুর মধ্যে পানি-যুদ্ধের আর দরকার হবেনা। কারন পানি প্রবাহ থাকলেইতো যুদ্ধ। উজান থেকে বয়ে আসা কিছু নদীর প্রবাহ চুরি করার কারণে গঙ্গায় যৎসামান্য প্রবাহ এখনো থকলেও আচিরেই অপরিনামদর্শি ব্যবস্থাপনার জন্য তা নিঃশেষ হয়ে যাবে।
সভায় গঙ্গার পানি প্রবাহ কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে যৌথ নদী কমিশনে প্রতিবাদ জানানোয় বাংলাদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানানো হয়। তবে খোদ ভারতের পানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন ক্রমাগত প্রবাহ হারিয়ে একসময়ের প্রমত্তা গঙ্গা শুকিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে এখন গঙ্গার পানি আসেনা। তলানির যে প্রবাহ ফারাক্কা থেকে পশ্চিমবঙ্গের দিকে গতি পরিবর্তন করে নেয়া হয় তা নেপাল থেকে নেমে আসা কিছু নদীর এবং তিস্তার গজল ডোবা থেকে সরিয়ে নেয়া পানির অংশ। সামনে দিন আসছে ফারাক্কায় আর প্রবাহ থাকবেনা বন্টনের জন্য।
বক্তারা উল্লেখ করেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু উপত্যকা চুক্তি এবং ভারত-নেপালের মধ্যে স্বাক্ষরিত মহাকালি চুক্তিতে যে গ্যারান্টি ও আর্বিট্রেশন ক্লজ রয়েছে তা ভারত-বাংলাদেশ নদী ব্যবস্থাপনা চুক্তির মধ্যে থাকা আবশ্যক। তারা উল্লেখ করেন, “নদী-পানির অধিকারের দাবীতে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ”।
মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশের নদী ও পানি অধিকারের দাবিতে ওয়াশিংটনের ক্যাপিটোল হিলে স্মারকলিপি প্রদান ও জাতিসংঘ এবং টাইমস স্কয়ারের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। সভায় বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক গুরুতর অসুস্থ মাহফুজুল্লাহ এবং আইএফসির অন্যতম সহ-সভাপতি অসুস্থ অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেনের আশু রোগমুক্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। – প্রেস বিজ্ঞপ্তি।