মুসলিম উম্মাহর ঐক্য সময়ের অপরিহার্য দাবি-পীর সাহেব চরমোনাই

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির, মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন- মুসলিম উম্মাহ আজ নানান সঙ্কটে নিপতিত। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে মুসলমানদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের সংবাদ আসছে প্রতিনিয়ত। মুসলমানদেরকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার জন্য চলছে নানামুখি ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত। এই পরিস্থিতিতে মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্ব রক্ষা, শক্তি বৃদ্ধি ও ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলায় টিকে থাকতে হলে ঐক্যের বিকল্প নেই। বিশেষ করে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে সকল দুর্নীতি, দুঃশাসন ও কায়েমী স্বার্থবাদের মূলোৎপাটন করে ইসলামকে বিজয়ী করতে হলে মুসলিম নেতৃবৃন্দকে আন্তরিকভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আজ ০৮ ডিসেম্বর রবিবার ফেনী মহিপাল সরকারী কলেজ মাঠে ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিলের নমুনায় অনুষ্ঠিত তিনদিন ব্যাপী মাহফিলের সমাপনী অধিবেশনে পীর সাহেব চরমোনাই উপর্যুক্ত কথা বলেন। তিনি আরো বলেন- আজ মুসলমানদের অধঃপতনের একটি মৌলিক কারণ দুনিয়ার প্রতি অত্যাধিক ভালোবাসা। দুনিয়ার ভালোবাসায় মত্ত হয়ে হালালকে হালাল এবং হারামকে হারাম মনে করা হচ্ছে না। দুনিয়ার প্রতি অধিক আসক্তির কারণে যাবতীয় অন্যায়-অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ছে। তাই দুনিয়ার ভালোবাসা বাদ দিয়ে আল্লাহর ভালোবাসা অন্তরে সৃষ্টি করতে হবে।
বাংলাদেশ মুজাহিদ কমিটির ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত এই মাহফিল গত ০৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। দেশের প্রখ্যাত উলামায়ে কিরাম এই তিনদিন এখানে বয়ান করেন। ফেনীতে চরমোনাইয়ের নমুনায় তিনদিন ব্যাপী মাহফিল এবারই প্রথম অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম হলেও মানুষের উপস্থিতি ছিল অবাক করার মতো। সুবিশাল পেন্ডেল কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে তিল ধারণের ঠাই ছিলো না রাস্তায়ও। হাজার হাজার মানুষ দূর-দুরান্ত থেকে ছুটে এসেছে বয়ান শোনার জন্য। অনেকে এসেছেন কাফেলা সহকারে। মুসল্লিদের সেবা দানে মাহফিল কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দ্বারা গোটা মাহফিল অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনা করেছে।
মাহফিলের তৃতীয় দিন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফেনী-০২ আসনের মাননীয় সাংসদ, জনাব নিজাম উদ্দীন হাজারী এমপি। তিনি মাহফিলে আগত সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং তার এলাকায় এমন একটি দীনি মাহফিল অনুষ্ঠিত হওয়ায় তিনি আনন্দঘন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন।
তিনদিন ব্যাপী মাহফিলে প্রথম দিন প্রধান অতিথি ছিলেন, চরমোনাই ইউনিয়নের স্বনামধন্য চেয়ারম্যান, মুফতি সৈয়দ এসহাক মোহাম্মাদ আবুল খায়ের। দ্বিতীয় দিন প্রধান অতিথি ছিলেন, নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন, মুফতি সৈয়দ মোহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই। এছাড়াও দেশবরেণ্য উলামায়ে কিরামদের মাঝে যারা বয়ান করেছেন তাদের মাঝে উল্লেখযোগ্য হলেন- খুলনার পীর সাহেব মাওলানা আবদুল আউয়াল, অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, মাওলানা আবদুল মজিদ পীর সাহেব মোড়েলগঞ্জ, মাওলানা মাহমুদুল হোসাইন ওয়ালিউল্লাহ, তারুণ্যের অহঙ্কার মুফতি হাবিবুর রহমান মিছবাহ (কুয়াকাটা), মুফতি হেদায়াতুল্লাহ আজাদী, মাওলানা রাশেদুল ইসলাম রহমতপুরী, মুফতি শহিদুল্লাহ, মুফতি ইউসুফ কাসেমী প্রমুখ।
আজ রবিবার ফজরের নামাজের পর বয়ান শেষে মুনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল সমাপ্ত হয়। পীর সাহেব চরমোনাই মুসলিম উম্মাহ এবং দেশবাসীর কল্যাণ ও সমৃদ্ধি কামনা করে দোয়া করেন।
বার্তা প্রেরক, মুফতি আবদুর রহমান গিলমান, আহ্বায়ক, মিডিয়া বিষয়ক উপকমিটি