সিডও’র ওপর আপত্তি বহাল রাখতে হবে -মাওলানা নেজামী

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাশে নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী জাতিসংঘের নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ-সিডও-এর ইসলাম বিরোধী ধারা ২ এবং ১৬.১-এর ওপর আরোপিত বাংলাদেশের আপত্তি প্রত্যাহারের জন্যে মহিলা পরিষদের দাবির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন যে, বিশ্বের উলামায়ে কেরামের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত মোতাবেক জাতিসংঘ প্রণীত ”নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও)”-এর উত্তরাধিকার (মিরাস) সম্পর্কিত ধারা পবিত্র কোরআন-সুন্নাহর পরিপন্থী। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, মুসলিম উম্মাহর সুদীর্ঘকালের বোধ-বিশ্বাসের সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে জড়িত উত্তরাধিকার আইন (মিরাস) পরিবর্তন করে পবিত্র কোরআন-সুন্নাহর সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক সিডও প্রণয়ন করা হয়। তদবধি সিডও ইসলাম বিরোধী হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। বাংলাদেশসহ ওআইসিভুক্ত মুসলিম দেশসমূহ উত্তরাধিকারসহ ইসলাম বিরোধী ধারাসমূহ সংরক্ষিত রেখে সিডও-তে অনুস্বাক্ষর করেন।
তিনি আরো বলেন, ১৯৪৬ সনে জাতিসংঘ মহিলা কমিশন গঠিত হয়। ১৯৭৯ সনের ১৮ ডিসেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সিডও প্রস্তাব গৃহিত হয়। ২০টি দেশ কর্তৃক অনুমোদনের পর ১৯৮৩ সনের ৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক চুক্তি হিসেবে সিডও বলবৎ হয়। তদবধি সিডও-এর ইসলাম বিরোধী ধারা সমূহের বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্ব সোচ্চার। বাংলাদেশ ১৯৭৫ সনে মেক্সিকো, ১৯৮০ মনে কোপেনহগেন, ১৯৮৫ সালে নাইরোবী পরবর্তীতে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত নারী সম্মেলনে বাংলাদেশ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু পবিত্র কোরআন-সুন্নাহর সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক বিধায় সিডও-এর ২ এবং ১৬(১)গ ধারা দু’টিতে আপত্তি জানায় । শুধু বাংলাদেশ নয়, বরং মুসলিমদেশ সমূহের সংগঠন ইসলামী সম্মেলন সংস্থা এবং সৌদি আরবসহ সকল মুসলিম দেশ ইসলাম বিরোধী ধারাসমূহ সংরক্ষিত রেখে সিডও-তে স্বাক্ষর করেছেন। তাই সিডও-এর উপরোক্ত ধারায় প্রদত্ত আপত্তি প্রত্যাহার করা হলে ইসলাম ধর্মে অনুপ্রাণীত এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় বোধ-বিশ্বাস এবং ঈমান-আক্বিদার প্রতি মারাত্মক আঘাত হানা হবে।
মাওলানা নেজামী পরিশেষে বলেন, পবিত্র কোরআন-সুন্নাহ ভিত্তিক ইসলামের উত্তরাধিকার আইনই মানব প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ইসলামের উত্তরাধিকার আইনে নারী-পুরুষের অধিকার সংরক্ষনের চমৎকার ব্যবস্থা আছে। পুরুষের তুলনায় দুর্বলতার কারণে নারীদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে তুলনামূলকভাবে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। উত্তরাধিকার আইনের সাথে ইসলামী মূল্যবোধ ও ঈমান-আক্বিদার সংশ্লেষ বিদ্যমান।
তিনি নজির হিসেবে উল্লেখ করেন যে, অনেক অমুসলিম দেশ সিডও-তে অনুস্বাক্ষরই করেনি বলে জানা যায়। দেশগুলো হচ্ছে, চীন, ভারত, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানী, রাশিয়া, সুইজারল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, ইসরাইল, লুক্সেমবার্গ, অস্ট্রিয়া, বেলারুশ, ব্রাজিল, বেলজিয়াম, বুলগেরিয়া, কানাডা, চিলি, হাঙ্গেরী, আয়ারল্যান্ড, ইতালী মেক্সিকো, মঙ্গোলিয়া, মিয়ানমার, নিউজিল্যান্ড, পোল্যান্ড, থাইল্যান্ড, ভেনিজুয়েলা, ডেনমার্ক, গ্রীস, লাটভিয়া, নরওয়ে, পর্তুগাল, রুমানিয়া, সুইডেন প্রভৃতি ।
মাওলানা মিজানুর রহমান, প্রচার সম্পাদক