‘সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন প্রান-প্রকৃতি রক্ষা ও গনতন্ত্র রক্ষার অংশ’

প্যারিস, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮ – “বৈশ্বিক দুষ্টচক্র সুন্দরবনসহ উপকূলীয় অঞ্চলকে বিপর্যস্ত করে জলবায়ু পরিবর্তনের সামনে বাংলাদেশকে আরো বিপন্ন করে তুলছে। একে মোকাবেলার জন্য ভারত বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক সংহতি দরকার।“ আজ ফ্রান্সের প্যারিসে তেল গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটির ফ্রান্স শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
ফাহাদ রিপনের সভাপত্বিতে ও আহমেদ আলী দুলালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় আনু মুহাম্মদ আরো বলেন- পরিবেশ ও প্রকৃতি বিধ্বংসী উন্নয়ন নীতি ও দেশি বিদেশি লুটেরা চক্রের মুনাফার লোভের সামনে সুন্দরবন আজ বিপদের সম্মুখীন। বাংলাদেশের জনগণ ও জাতীয় কমিটি ৮ বছর যাবত আন্দোলন করলেও দেশে জনগণের মত শোনার মত গনতান্ত্রিক সরকার না থাকায় রামপাল প্রকল্প বাতিল হয়নি। তিনি বলেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হল রাষ্ট্র ও সম্পদের উপরে জনগণের
মালিকানা কায়েম করা। সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন তাই প্রান-প্রকৃতি রক্ষা ও গনতন্ত্র রক্ষার অংশ। তিনি সরকারের জ্বালানী নীতির সমালোচনা করে বলেন এতে পরিবেশ বিনাশী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের উপরে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি নবায়নযোগ্য জ্বালানীর উপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন “পরিবেশ রক্ষা করে আরো সস্তায় বাংলাদেশের জ্বালানী চাহিদা পূরন করা সম্ভব।
তিন আগামী নির্বাচনে রাজনৈতিক দল গুলিকে রামপাল প্রকল্প বাতিল ও নির্বাচনী ঘোষনায় রামপাল প্রকল্পের বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করার দাবী জানিয়ে সুন্দরবন রক্ষায় আগামী ১০ নভেম্বর বিশ্বব্যাপি সুন্দরবন সংহতি দিবস পালনের আহবান জানান। তিনি আরো বলেন-“শ্রীলংকা যদি এনটিপিসি কয়লা প্রকল্প বাতিল করতে পারে তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না?“
আলোচনা সভায় বাপার যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন “সুন্দরবন যেহেতু বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ, সেহেতু এ আন্দোলনকে একটা বৈশ্বিক রুপ দিতে হবে।“ তিনি ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুযায়ী কৌশলগত সমিক্ষার সম্পন্ন করার দাবী জানান। তিনি সরকারকে জনগণের মতামত গ্রহন করে বাংলাদেশের স্বার্থে রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবী করেন।
বাসদের কেন্দ্রিয় সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন বলেন “সুন্দরবন আন্দোলন গোটা দেশের মানুষের মধ্যে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষার অনুভূতি জাগিয়ে তুলেছে।“ তিনি অবিলম্বে ভারতীয় ও বহুজাতিক স্বার্থকে প্রাধান্য না দিয়ে জনগণের দাবি মেনে নিয়ে রামপাল প্রকল্প বাতিলের দাবী জানান।
সভায় জাতীয় কমিটি ইউরোপ শাখার সমন্বয়ক মোস্তফা ফারুক আগামি ১০ নভেম্বর জাতীয় কমিটি ঘোষিত বিশ্ব সুন্দরবন সংহতি দিবসে ইউরোপের দেশে দেশে কর্মসূচি সফল করার আহবান জানান।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন রাকিবুল ইসলাম, দেবাশীষ সরকার, ড. আখতার সোবহান মাস্রুর, তন্বী নওশীন, কাব্য কামরুল, মোহাম্মদ গোলাম মুরশেদ, সুনান মোরশেদ, জুয়েল দাস লেনিন, শাখাওয়াত হোসেন হাওলাদার, নয়ন মামুন, ফ্লোরা ক্লেয়ার প্রমুখ।
বার্তা প্রেরক – রাকিবুল ইসলাম, সদস্য সচিব, তেল-গ্যাস রক্ষা জাতীয় কমিটি, ফ্রান্স শাখা।