স্বপ্রণোদিত হয়ে এলাকা পর্যায়ে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কমিটি গঠন করুন -মুসলিম লীগ

সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণের মেয়র কর্তৃক ডেঙ্গুর ভয়াবহতাকে গুজব বলে উড়িয়ে দেয়ার অপচেষ্টার কড়া সমালোচনা করে বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি এড. বদরুদ্দোজা সুজা এবং মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের এক বিবৃতিতে বলেন, ডেঙ্গু এখনো ঢাকা ও তার আশেপাশের জেলা পর্যায়ে সীমাবদ্ধ থাকলেও পবিত্র ঈদুল আযহার সময় ঢাকা থেকে বাড়ী ফেরা মানুষের উপর ভর করে গ্রাম পর্যায়ে বিস্তার লাভ করতে পারে। এই সময়ের ভেতর ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে না আসলে তা সারা দেশ ব্যাপী ছড়িয়ে মহামারী আকার ধারণ করবে। হাসপাতাল গুলোতে ডেঙ্গু রুগীদের সংখ্যা, পরিমাণ ও অবস্থা কোনভাবেই ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের কথাকে সমর্থন করে না। বিশেষ পরিস্থিতিকেও গুজব বলে উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে একসময় জাতীয় পর্যায়ে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসবে বলে নেতৃবৃন্দ মন্তব্য করেন।মশা নিয়ন্ত্রণে মুসলিম লীগ নেতা তৎকালীন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরীর ভূমিকা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, মশার জন্য ঢাকার কুখ্যাতি অতি পুরনো। মুঘল আমলে ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদ রাজধানী স্থানান্তরিত হয়েছিল যার অন্যতম কারণ ছিল মশা ও ম্যালেরিয়ার অত্যাচার। ব্রিটিশ আমলে ঢাকার পল্টনে পানিশমেন্ট পোস্টিঙে আসা ব্রিটিশ সৈন্যরাও কুখ্যাত মশা আর ম্যালেরিয়ার অত্যাচারে অসহায় বোধ করত। ব্রিটিশ পরবর্তী পাকিস্তান আমলে ১৯৬২ সালে হাবিবুল্লাহ বাহার চৌধুরী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মশার ঔষধ ছিটানোর বিশ হাজার যন্ত্র আমদানি করেন যা ৯০এর দশকেও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ব্যবহার করে গেছে। পাশাপাশি তিনি রাস্তার পাশে গভীর ড্রেন খনন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন, আরেক ধনাঢ্য মুসলিম লীগ নেতা ইস্পাহানীর আর্থিক সহায়তার মশার ঔষধ ছেটানোর দুইটি বিমান কেনার মত যুগান্তকারী কিছু কার্যাবলী ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে ঢাকার মশাকে এমনভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন যার প্রভাবে আশির দশকেও ঢাকার মানুষ মশারী ছাড়া ঘুমাতে পারতেন। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে অবান্তর মন্তব্য থেকে বিরত থেকে বরং পূর্বসূরিদের কর্মকাণ্ড থেকে শিক্ষা নিতে ক্ষমতাসীন মেয়র ও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের নিকট আহ্বান জানান নেতবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ডেঙ্গু একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। শুধুমাত্র সরকার ও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষে একক ভাবে এ দুর্যোগ মোকাবেলা সম্ভবপর নয় বিধায় সমাজের প্রতিটি সচেতন মানুষকে এলাকাভিত্তিক “ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ কমিটি” গঠনের মাধ্যমে স্বপ্রনোদিত ভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এর মোকাবেলা করতে হবে। অসহায় সিভিয়ার ডেঙ্গু রুগীদের প্রয়োজনীয় রক্তের যোগান নিশ্চিত করতে প্রতিটি এলাকার অধিবাসীদের ব্লাড গ্রুপের ডাটাবেস গড়ে তোলার জরুরী উদ্যোগ গ্রহণের জন্য উদ্যমী যুবকদের নিকট আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে সরকার দল-মতের ঊর্ধ্বে থেকে প্রয়োজনীয় প্রচারণা ও সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংবাদ প্রেরক -কাজী এ.এ কাফী, অতিঃ মহাসচিব।