অবিলম্বে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলাকারীদের বিচার-শাস্তি দাবী

দেশের ৪৩ জন শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবি গতকাল রোব্বার, ২৮ অক্টোবর ২০১৮ অবিলম্বে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে হামলাকারীদের বিচার, গ্রেফতার ও শাস্তি দাবী করেছেন। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন,   আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বুদ্ধিজীবি ডা. জাফরউল্লাহ্ চৌধুরীকে হয়রানি করতে তাঁর বিরুদ্ধে জমি দখল, মাছচুরি, গাছ চুরি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি নানা ভিত্তিহীন অভিযোগে মামলা দেয়া হচ্ছে। গত ২৬ অক্টোবর সাভারে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র, (যা মুক্তিযুদ্ধের সময় আহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্যে গঠিত ফিল্ড হাসপাতাল এর উত্তরসূরি) এবং আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পিএইচএ ভবনে হামলা হয়েছে এবং ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। প্রায় দুই শ আতঙ্ককারি একযোগে হামলা চালায়। ছাত্রীদের তিনটি হলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সন্ত্রাসীরা ছাত্রীদের গলা ধাক্কা দিয়ে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ অশালীন আচরণ করে হল থেকে বের করে দেয়। এই সময় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিমন হোসেনকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দেয়া হয়। পত্রিকার খবর অনুযায়ি হামলার সময় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কাছে থাকা সত্ত্বেও কোন ব্যবস্থা নেয় নি। এমন কি থানায় মামলা দিতে গেলে সে মামলা গ্রহণ করা নিয়ে নানা অজুহাত দেখানো হয়েছে।
আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তদন্ত করে এর সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার ও শাস্তি দাবি করছি। একই সাথে মুক্তিযোদ্ধা ও বুদ্ধিজীবি ডা. জাফরউল্লাহ্ চৌধুরী’র বিরুদ্ধে আদালত কেন্দ্রিক মামলা-হামলা এবং হয়রানি বন্ধ করতে পদক্ষেপ গ্রহণ, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ওপর অশালীন আচরণ এবং সাহসী ছাত্র লিমন হোসেনকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিচারেরও দাবি জানাচ্ছি।
একই সাথে আমরা আইন শৃংখলা বাহিনীর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার নিন্দা জানাই এবং জনগণের আস্থা অর্জনের স্বার্থে কোন প্রকার ভয় ও করুণার উর্ধ্বে থেকে পেশাগত উৎকর্ষের সাথে নিরপেক্ষভাবে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিতের আহবান জানাচ্ছি।
১. অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরি, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবি; ২. এম হাফিজুদ্দিন খান, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা; ৩. ড. শাহদিন মালিক, আইনজীবি; ৪. ড. আসিফ নজরুল, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ৫. ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী পরিচালক, টি আইবি; ৬. ব্যারিস্টার সারা হোসেন, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী; ৭. লুবনা মরিয়ম, সংস্কৃতি কর্মী; ৮. রেহনুমা আহমদ, লেখক; ৯. সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, পরিবেশ আইনজীবি; ১০. নুর খান, মানবাধিকার কর্মী; ১১. বদিউল আলম মজুমদার, বুদ্ধিজীবি ও মানবাধিকার কর্মী; ১২. ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী; ১৩. ফরিদা আখতার, লেখক ও নারী অধিকার কর্মী; ১৪. নাসরিন সিরাজ, গবেষক; ১৫. শিরীণ প হক, নারী আন্দোলন ও মানবাধিকার কর্মী; ১৬. ড. রিদওয়ানুল হক, শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ১৭. অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ১৮. আদিলুর রহমান খান, আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী; ১৯. অধ্যাপক দিলারা চৌধুরি, অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ২০. মীর্জা তাসলিমা সুলতানা, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ২১. রেজাউর রহমান লেনিন, শিক্ষক, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী; ২২. নঈম জাহাঙ্গীর, প্রাক্তন মহাসচিব, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ; ২৩. মনোয়ারুল ইসলাম, প্রাক্তন সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ; ২৪. নুরুল আমিন, প্রাক্তন সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ; ২৫. আব্দুল কাইয়ুম খান, প্রাক্তন প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ; ২৬. মিজানুর রহমান খান, মুক্তিযোদ্ধা, ১১ নং সেক্টর; ২৭. সিরাজুল হক, সাবেক এমপি, মুক্তিযোদ্ধা; ২৮. হাবিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা ১১ নং সেক্টর; ২৯. কামালউদ্দিন আহমেদ ডিএলএফ কমান্ডার, কাপাশিয়া থানা; ৩০. হাবিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা ২ নং সেক্টর; ৩১. রশিদ নোমান, মুক্তিযোদ্ধা, ৯ নং সেক্টর; ৩২. শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা ১১ নং সেক্টর; ৩৩. অধ্যাপক ড. চৌধুরি আবরার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক; ৩৪. ড. সায়দিয়া গুলরুখ, গবেষক ও সাংবাদিক; ৩৫. অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক; ৩৬. আশরাফ কায়সার, সাংবাদিক; ৩৭. বশিরুল হক, স্থপতি; ৩৮. আমেনা মহসিন, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ৩৯. মুক্তাশ্রী চাকমা, মানবাধিকার কর্মী; ৪০. অধ্যাপক ডা. নায়লা খান, শিশু বিশেষজ্ঞ ও নারী অধিকার কর্মী; ৪১. তাসকিন ফাহমিনা, নারী ও মানবাধিকার কর্মী; ৪২. সাদাফ নূর, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; ৪৩. জাকির হোসেন, মানবাধিকার কর্মী।
বিবৃতিদাতাদের পক্ষে – ফরিদা আখতার, ফোনঃ ০১৭১৫০২১৮৯৮