ধর্ষণ ঠেকাতে কার্যকর মৃত্যুদন্ডের আইন চাই -মুহাম্মাদ মুস্তাকিম বিল্লাহ

আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের হস্তক্ষেপে বাংলাদেশে ধর্ষণের মত ঘৃণ্য অপরাধ বেড়েই চলছে। এর ছোবল থেকে রেহাই পাচ্ছেনা শিশুরাও। ধর্ষণ প্রতিরোধে সরকারী-বেসরকারী ক্যাম্পেইন, সচেতনতা ও আইনের ভয় দেখিয়েও কিছুতেই ধর্ষণ ঠেকানো যাচ্ছেনা। কখনো কখনো ধর্ষিতা বিচার চেয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দারস্থ হয়ে নতুন সমস্যায় পতিত হয়। ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের আইন পাশ ও কোন প্রকার হস্তক্ষেপ না করে তা কার্যকর করা ব্যতীত ধর্ষণ ঠেকানো সম্ভব নয়।
আজ ১৩ মে ২০১৯ইং রবিবার বিকাল ৪টায় জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে দেশব্যাপী চলমান শিশু ধর্ষণ ও নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে জাতীয় শিশু-কিশোর মাসিক পত্রিকা ‘নকীব’ আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন ‘নকীব’ সম্পাদকমন্ডলীর প্রধান সম্পাদক মুহাম্মাদ মুস্তাকিম বিল্লাহ। তিনি বলেন, সম্প্রতি বেসরকারী সংস্থা মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন প্রকাশিত জরিপে উঠে এসেছে চলতি মাসের প্রথম আট দিনে সারা বাংলাদেশে ৪১টি শিশু ধর্ষণ ও ৩টি শিশু ধর্ষণচেষ্টার শিকার হয়েছে। এই ঘটনার দায় কখনোই বাংলাদেশ সরকার এড়াতে পারেনা। নৈতিক অবক্ষয়ের কারনে যে দেশের মানুষের কাছে ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা এখন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, সে দেশে ধর্ষকেরা বিচারের বাহিরে ঘুরে বেড়ালে এটা ধর্ষণে উস্কানি দেয়ারই নামান্তর।
মুহাম্মাদ মুস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, একটি বেসরকারী সংস্থার গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, ২০১১ সাল থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত ঢাকা, ঝিনাইদহ, জামালপুর, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, নোয়াখালী এই ছয়টি জেলায় ধর্ষণের মামলা হয়েছে ৪৩৭২টি। যার মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র পাঁচ জনের। এই প্রতিবেদনটি আমাদেরকে কি বার্তা দিচ্ছে? তবে কি বিচারকগণ ধর্ষণকে কোন অপরাধই মনে করেন না? নাকি ক্ষমতাসীনদের ইশারায় প্রতিনিয়তই বিচারের আওতা হতে ধর্ষকরা রেহাই পেয়ে যাচ্ছে?
নকীব-এর নির্বাহী সম্পাদক জিয়াউল আশরাফ এর সঞ্চালনায় মানববন্ধনে নকীব প্রধান সম্পাদক মুহাম্মাদ মুস্তাকিম বিল্লাহ বলেন, আমরা মনে করি, দেশের প্রতিটি পর্যায়ে বাধ্যতামূলক নৈতিক শিক্ষার অভাব, পর্দার বিধান লঙ্ঘন, যৌন শিক্ষার নামে অবাধ যৌনালাপ, টিভি সিনেমায় অশ্লীল চলচ্চিত্র প্রদর্শন, অবাধ পর্ণোগ্রাফির সয়লাভ ও সর্বোপরি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিচার বিভাগের উদাসীনতায় দিনদিন ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সুতরাং ধর্ষণরোধে শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, পর্দার বিধান পালনে সরকারীভাবে উৎসাহ প্রদান, যৌন শিক্ষার নামে বেহায়াপনা বন্ধ করা, টিভি সিনেমায় অশ্লীল চলচ্চিত্র প্রদর্শনে সরকারী নিষেধাজ্ঞা জারি, অবাদ পর্ণোগ্রাফি সম্প্রচার বন্ধে পর্ণোসাইট নিয়ন্ত্রণ করা ও ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদন্ডের আইন পাশ ও তা কার্যকর করার জোর দাবী করছি। অবিলম্বে ঝুলে থাকা ধর্ষণ মামলাগুলো আমলে নিয়ে ধর্ষকদের বিচারের আওতায় আনা না হলে আমরা সাধারণ জনতাকে সাথে নিয়ে দেশব্যাপী প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবো।
মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন, নকীব সম্পাদনা পরিষদের সদস্য মুহাম্মাদ আব্দুল জলিল, শরিফুল ইসলাম রিয়াদ, গাজী মুহাম্মাদ ওসমান গণী, এম.এম. শোয়াইব, মুহাম্মাদ মাহমুদুল হাসান, মুহাম্মাদ সিরাজুল ইসলাম প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।
বার্তা প্রেরক – কে এম শরীয়াতুল্লাহ, সদস্য, নকীব পরিবার