বন্যা ত্রানের পাশাপাশি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের উদ্যোগ নিনঃ ফারাক্কা কমিটি

ঢাকা, জুলাই ২৫ – তিস্তা ও ব্রহ্মপূত্র নদের উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল মারাত্মকভাবে প্লাবিত হওয়ায় উদবেগ প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি) সরকারকে ড্রেজিং এবং নদী শাসনের মাধ্যমে দেশের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলোর পানিবহন ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, যৌথ নদীগুলোর অববাহিকা ভিত্তিক ব্যবস্থাপনার জন্য উদ্যোগ নিয়ে বন্যা-ক্ষরা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের পথ তৈরীর আহবান জানিয়েছে।
হিমালয় থেকে বয়ে আসা যৌথ নদীগুলোর পানির খন্ডিত এবং অপরিনামদর্শি ব্যবস্থাপনা এবং উজানে স্থাপিত বাঁধের সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রনের অভাবে বাঁধ ভাঙ্গনসহ বিবিধ কারণে বন্যা ও ক্ষরার চক্র ক্রমেই মারাত্মক আকার ধারণ করে চলেছে। তিস্তা এবং ব্রহ্মপূত্র নদের উজানে স্থাপিত বাঁধ ভাঙ্গনের কারণে এবার উজানে প্রাকৃতিক দূর্যোগ দেখা গেছে। আয়ারল্যান্ড সূপ্রিম কোর্ট অতিসম্প্রতি এক রায়ে ২০০৯ সালের ধংসাত্মক বন্যার জন্য সেদেশের দুটি ড্যামের ব্যবস্থাপকদের দায়িত্বহীনতাকে দায়ী করেছে। কিছুদিন আগে ভারতে প্রকাশিত এক রিপোর্ট থেকে জানা গেছে বাঁধ অব্যবস্থাপনার কারণে সেদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বন্যা হয়েছে। যৌথ নদীগুলোর ভাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়লেও এদেশের সরকার ও জনগনের কিছুই করার থাকেনা। আইএফসি তাই ফারাক্কা ব্যারেজসহ ক্ষতিকারক সকল বাঁধ ডিকমিশনের পদক্ষেপ দাবি করছে।
তিস্তা ও ব্রহ্মপূত্র নদ থেকে নেমে আসা উপর্যুপরি বন্যা বাংলাদেশের মোট ২৭টি জেলায় প্রলয়াংকরী বন্যার সৃষ্টি করেছে। সুনামগঞ্জ জেলা শহরের ঘরবাড়িতে বন্যার পানি ঢুকেছে। পানিবন্দি মানুষ রান্নাবান্নার সুযোগ না থাকায় অনাহারে পড়েছে। নলকুপ পানিতে ডুবে যাওয়ায় সুপেয় পানির অভাব সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষাকালীন উতপাদিত শাকসবজি ধংস হয়ে গেছে। পানির তোড়ে বহু সড়ক ও মহাসড়ক ভেঙ্গে গেছে। গবাদিপশু নিয়ে মানুষ বিপদ্গ্রস্ত। এমতাবস্থায় উপদ্রুত একালার মানুষের জন্য সরকারী ত্রানব্যবস্থা জোরদার করা জরূরী।
আইএফসি মনে করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের ক্ষয়ক্ষতি লাঘবের পাশাপাশি সদাশয় সরকারকে বন্যা-খরার চক্র থেকে মুক্তির লক্ষ্যে যৌথ নদীগুলোর উতপত্তি স্থল থেকে সাগরমোহনা পর্যন্ত অববাহিকা ভিত্তিক সমন্বিত ব্যবস্থাপনার জন্য অনতিবিলম্বে উদ্যোগ গ্রহন করতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন আইএফসি নিউইয়র্ক চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু, মহাসচিব সৈয়দ টিপু সুলতান, আইএফসি বাংলাদেশ সভাপতি অধ্যাপক জসিম উদ্দিন আহমাদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি ডঃ এস আই খান এবং আইএফসি সমন্ব্য়ক মোস্তফা কামাল মজুমদার।