বিজয়ের সুফল অর্জনে নীতি ও নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটাতে হবে – আইএবি

মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী বলেন, স্বাধীনতা আমাদের শ্রেষ্ঠ অর্জন। ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জতের দাম দিয়ে বহুমূল্যে আমাদেরকে এ স্বাধীনতা অর্জন করতে হয়েছে। একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা অবশ্যই গর্বিত। তবে যে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, গত ৪৮ বছরে আমরা তা কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি আজ সে আত্মজিজ্ঞাসার দিন। স্বাধীনতার পর সমাজে সাম্যের পরিবর্তে ধনী-দরিদ্রের পাহাড়সম বৈষম্য বেড়েছে । বাংলাদেশের ইতিহাসে এখন সবচেয়ে বেশি আর্থিক বৈষম্য বিরাজ করছে। শাসকগোষ্ঠী একের পর এক নাগরিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদাকে পদদলিত করেছে। বারবার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। গত ৪৮ বছরে বৈশ্বিক সূচকে নেতিবাচক দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও ইতিবাচক দিক থেকে বাংলাদেশকে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। এর জন্য ভ্রষ্ট নীতি ও ব্যর্থ নেতৃত্ব উভয়টাই দায়ী। অতএব স্বাধীনতার সুফল প্রতিটি মানুষের কাছে পৌছে দিতে এই ব্যর্থ নীতি ও দূর্নীতিগ্রস্থ নেতৃত্বের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে। তারা জনগনের নয় নিজেদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটিয়েছে।
ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধন বিল বাতিলের দাবী জানিয়ে তিনি বলেন, হিন্দুত্ববাদী ভারত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন কখনই বাস্তবায়ন হবে না।
তিনি আজ ১৬ ডিসেম্বর’১৯ সোমবার বিকাল ৩টায় পুরানা পল্টনস্থ হাউজ বিল্ডিং চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘‘বিজয়ের সুফল অর্জনে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপর্যুক্ত কথা বলেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা সভায় বক্তব্য রাখেন আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ, কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা নেছার উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাসেম, নগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, আলহাজ্ব আব্দুর রহমান, এ্যড. হানিফ মিয়া, আলতাফুর রহমান, মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, ছাত্রনেতা এম. হাছিবুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম কবির প্রমূখ।
প্রধান অতিথি আরো বলেন, বাঙালী জাতি গত হাজার বছর ধরে মুসলমান। ইসলামের সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায় বিচারের আহবানে অনুপ্রাণিত হয়ে বাঙালী জাতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। ইসলামই পারে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার নিশ্চয়তা দিতে।
মহাসচিব ইউনুস আহমাদ বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। গত ৪৮ বছরেও মুক্তিযোদ্ধাদের একটি স্বচ্ছ, ক্রটিমুক্ত ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি না হওয়া খুবই লজ্জাজনক। তিনি অবিলম্বে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের স্বচ্ছ তালিকা তৈরি করার এবং তাদের যথাযোগ্য মর্যাদা প্রদানের দাবী জানান।
মাওলানা ইমতিয়াজ আলম বলেন, বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জনগণের বাক স্বাধীনতা, ভোটাধিকারসহ নাগরিক অধিকারসমূহ কেড়ে নিচ্ছে। একাত্তরের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে এ শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেন, একটি সুখী-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনে আমাদেরকে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসতে হবে। সংবর্ধনা সভায় জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের ক্রেস্ট প্রদানের মাধ্যমে সংবর্ধিত করা হয়।
বার্তা প্রেরক, শেখ মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ , ঢাকা মহানগর উত্তর