মাস্ক ব্যাবহারে এতো অনীহা কেন?

এম জাহিদুল হক
ক’দিন আগে রিকশা এ যাওয়ার সময় লক্ষ্য করলাম, রিকশা চালক এর মুখে মাস্ক নাই। জিজ্ঞেস করলাম– আপনার মাস্ক কোথায় ? পকেটে আছে। পরেননি কেন? উত্তরে বললো – মাস্ক পরলে দম নিতে কষ্ট হয়, রিকশা টানতে পারিনা? কিন্তু আপনি কি জানেন, মাস্ক না পরে আপনি যেমন নিজেকে করোনা আক্রন্তের ঝুঁকিতে ফেলছেন ঠিক তেমনি যাত্র্রীকেও। আমি বললাম, কষ্ট হলেও মাস্ক পরবেন, নিজেকে এবং আসে-পাশের সবাইকে ভালো রাখতে।সত্য কথা বলতে কি , অনেকেই কোবিদ -১৯ থেকে বাঁচার সংগ্রাম করতে করতে অনেকটা হতাশ ও বিষন্নতায় নিমজ্জিত হয়ে পরেছেন। সাধারণ মানুষ একদিকে গভীর অর্থনৈতিক সঙ্কটে রয়েছেন, অন্যদিকে সৃষ্টি হয়েছে কিছুটা মানসিক বিষণ্ণতা । আমরা যতই বলি এটা করুন ওটা করুন , বাস্তবে সবদিক ম্যানেজ করা অনেক কঠিন। মানুষের আয়-রোজগার এর পথ অনেকটাই সংকীর্ণ ও সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে । হয়তো এসব কারণেই সাধারণ মানুষদের করোনা থেকে আত্মরক্ষার বিধি নিষেধ মানতে এতো অনীহা।
এমতবস্থায় যারা সরকারি ব্যাবস্থাপনায় রয়েছেন , তাদেরকে আরো ধৈর্য সহকারে জনগণকে বোঝাতে হবে। সাধারণ মানুষ এর আয় রোজগারের ব্যবস্থা করতে হবে। সাথে সাথে সমাজে যারা বিত্তবান এবং শিক্ষিত আছেন তাদেরকেও সাধারণ মানুষের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে।
এখানে কোবিদ -১৯ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে একটা কথা বলতে চাই। সেটা হলে, এতো বেশি সংখক মানুষ বাইরে বেরুলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রায় অসম্ভব। এমতবস্থায় বেশিরভাগ লোকজন যাতে নিজ নিজ গৃহে অবস্থান করে সেটা উদ্বুদ্ধকরণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন।
টেলিভশন খবরে দেখেছি, অনেক ট্রেন , বাস ও লঞ্চ যাত্রী বাহনের ভিতরে বসে অভিযোগ করছেন যে কোনোরূপ স্বাস্থবিধি মানা হচ্ছে না ; অথচ তাঁরা নিজেরাই সেটার অংশ। সবাইতো যার যার প্রয়োজনেই দ্রুত নিজ নিজ গন্তব্যে পৌছাতে চান। কোবিদ -১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বাসাতে থাকাই উত্তম।
আজ আমি যখন এই লেখাটি লিখছি , তখন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২ ০২ ১’ এবারের প্রতিপাদ্য- ‘Building a fairer, healthier World’। সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, সহযোগিতায় আমরা কি পারবোনা একটি সুন্দর এবং সুস্থ বাংলাদেশ তথা বিশ্ব গড়ে তুলতে?
(লেখক : প্রফেসর , শেরেবাংলা কৃষি বিশবিদ্যালয় ,ঢাকা )