শরীয়তপুর আ’লীগ 2 গ্রুপের পাল্টা-ধাওয়া, শতাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
এসময় প্রায় দুই শতাধিক ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে পুলিশ।এদিকে, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় নড়িয়া বাজার ও আশপাশের এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
নড়িয়া থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নড়িয়া বড় ব্রিজের পশ্চিম পাশের বাজারে হঠাৎ করে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। ঘটনার সময় বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। হামলা পাল্টা হামলায় উভয় গ্রুপের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নড়িয়া বাজারসহ আশ পাশের এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন বাদশা শেখ বলেন, ‘আমার সমর্থক নড়িয়া বাজারের তেল ব্যবসায়ী রিপন শেখের সাথে শাহ আলম চৌকিদারের সমর্থক রাজ্জাক ছৈয়ালের সাথে ডিজেল ক্রয় বিক্রয় নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে এ নিয়ে শাহ আলম চৌকিদার ও মোখলেছ ব্যাপারীর লোকজন ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে আমাদের লোকজনের ওপর হামলা করলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’
রিপন শেখের বাবা জবেদ শেখ বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে শাহ আলম চৌকিদার ও তার লোকেরা আমার ছেলে রিপনের দোকানের সামনে আড্ডা দেয় এবং ছেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের খারাপ মন্তব্য করে। এর প্রতিবাদ করায় ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে আমার ছেলেকে মারধর করেছে শাহ আলম চৌকিদারের লোকেরা। শুধু তাই নয় আমার ছেলের দোকান তালা বদ্ধ করে রেখেছে তারা। আমি এর বিচার চাই।’
নড়িয়া পৌরসভা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক মোখলেছ বেপারী বলেন, ‘আমি নড়িয়া বাজারে মাছের ব্যবসা করি। প্রায় তিন মাস আগে বাদশা শেখ ও তার লোকজন আমাকে ও আমার ভাইদের মারধর ও ভাংচুর করে আড়াই লাখ টাকা নিয়ে যায়। সেই থেকে বাদশা শেখ আমাদেরকে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে। তার ভয়ে প্রায় ৩ মাস আমার ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে। গতকাল রাতে হঠাৎ করে বাদশা শেখের নেতৃত্বে দুই দিক থেকে আমাদের ওপর হামলা চালায়। পরে আমরা আত্মরক্ষায় তাদেরকে প্রতিহত করি।’
নড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম চৌকিদার বলেন, ‘আমরা কয়েক জন মিলে নড়িয়া বড় ব্রিজের পশ্চিম পাশের বাজারে কবিরের কাঠের দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ করে বাদশা শেখের লোকজন ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) এসএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় শাহ আলম চৌকিদার ও মোখলেছ বেপারী এক পক্ষ নেয় এবং অপর পক্ষ বাদশা শেখ ও জবেদ শেখের সাথে এ ঘটনা ঘটে। আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করতে ৫২ রাউন্ড (রাবার বুলেট) ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি।’
এ ঘটনায় এখনো কোনো পক্ষ মামলা না করলেও, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলে জানান তিনি। – UNB