অপরিকল্পিত বাড়ী নির্মাণ গ্রামবাংলায় বিপর্যয় ডেকে আনছে 

মোতাহার হোসেন
গ্রামবাংলার প্রায় সর্বত্রই প্রায় একই রুপ।বিস্তির্ন ফসলের মাঠ তারপাশে সারিবদ্ধ লোকালয়। কাচা পাকা ঘরবাড়ি রাস্তা ঘাট।অধিকাংশ বাড়ী রাস্তা সংলগ্ন।নালা আছে,রাস্তায় ছোট ছোট পুল কিংবা কালভার্ট সেখান দিয়ে সহজেই বর্ষা কালে বৃষ্টির পানি নেমে যায়।অথবা ধারেকাছে নদী থাকলে নদীর পাড় ঘেষে অধিকাংশ লোকালয়। পানি নিস্কাশনে কোনরকম প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়নি আগে। নদীর কলতান, পাখিদের কলরবে মুখর ছিল আমাদের গ্রামবাংলা।কিন্তু ইদানিং এসব নিয়ম কেউ মানছেনা। এখন বাড়ী নির্মাণ হচ্ছে যত্রতত্র, পানি নিস্কাষনের পথ বন্দ করে দিয়ে। সাম্প্রতিক কালে গ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এ পরিবর্তনের মূল কারন,বিদেশে কর্মসংস্থান। বিশ্ব শ্রম বাজারের দরজা খুলে যাওয়ার ফলে গ্রামের লক্ষ লক্ষ বেকার যুবক এখন বিদেশে শ্রম বিনিয়োগ করছে।তাদেরকে আমরা বলি প্রবাসী।
এ প্রবাসীরা রেমিটেন্স আনছে যা দিয়ে আমরা মোড়লীপনা দেখাচ্ছি। এরা আমাদের অভিশাপ নয় আর্শিবাদ।
এদের কারনে গ্রামের উন্নয়ন হচ্ছে তবে অপরিকল্পিত ভাবে।সমস্যাটা এখানে।এরা নতুন নতুন বাড়ী বানাচ্ছে। এর জন্য রাস্তা সংলগ্ন জমি দরকার, মাটি দরকার ইট সিমেন্টের । কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অন্নত্র এসব বাড়ীঘর নির্মাণের সময় পানি নিস্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে কিনা তাদেখার কেউ নেই।
বাড়ী বানাচ্ছে আপত্তি নেই, বানাবেইত কিন্তু যেভাবে বানাচ্ছে তাতে এ বাড়ি আর বেশিদিন বাসযোগ্য থাকবে না, একেত বাড়ী বানাচ্ছে এল জি ইডির রাস্তা ঘেসে, বন্ধ করে দিচ্ছে এল জি ইডির কালভার্ট। অথবা সরু করে দিচ্ছে পুল খাল এবং নালা। এতে করে বর্ষা কালে পানি আর সরবেই না অন্নদিকে ইটের চাহিদা যেমন বেড়েছে তাঁরই সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মাটির চাহিদা । মাটি বিক্রি এখন লাভজনক তাই কৃষকরা মাটি বিক্রি করছে দেদারসে, একদিকে অপরিকল্পিত বাড়ী নির্মাণ অন্নদিকে মাটি বিক্রি। পানি নিষ্কাশনের পথ প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাতেকরে জমি আরও নিচু হয়ে যাচ্ছে। এর পরিনতি হবে ভয়াবহ, ফসলের জমি কমে যাবে, রোগবালাই লেগেই থাকবে। বছরের বছর এরুপ চলতে থাকলে গ্রামবাংলায় ভুপ্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসবে । প্রকৃতিকে এভাবে আঘাত করলে প্রকৃতি অন্নভাবে প্রতিশোধ নিতে পারে, ভূমিধ্বস, ভুমিকম্প, মহামারির মত রোগ বালাইএর বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।
তাই বলছিলাম অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মাণ বন্ধ করতে হবে। বন্ধ করতে হবে মাটি বিক্রি। স্থানীয় সরকারকে এখনি ব্যবস্থা নিতে হবে। অনুমোদন ব্যতিরেকে বাড়ী নির্মান করা যাবেনা, যাবেনা ফসলি জমির মাটি বিক্রি ।