জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে উৎপাদনশীলতা

এম জাহিদুল হক
প্রতিবছরের মত এ বছরও ২রা অক্টোবর পালিত হচ্ছে ‘জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস-২০২০’। এবারের জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবসের প্রতিপাদ্য –‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে উৎপাদনশীলতা’ । উল্লেখ্য যে ২০১১ সনে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোক্তা এবং শিল্প ও সার্ভিস সেক্টর এর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করার অভীষ্ট-এ প্রতি বছরের ২ অক্টোবর জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস পালনের ঘোষণা দেন। এর পর হতে এই দিবসটি প্রতি বছর পালিত হয়ে আসছে।

অবশ্য এবারের উৎপাদনশীলতা দিবস পালিত হচ্ছে ভিন্ন প্রেক্ষাপটে। কারণ এ বছর বাংলাদেশসহ সমগ্র পৃথিবী করোনা বৈশ্বিক মহামারী দ্বারা আক্রান্ত; ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস কর্তৃক সৃষ্ট কোবিদ-১৯ রোগে লক্ষ লক্ষ মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে, আক্রান্ত হয়েছে তারও অধিক।
খাদ্য নিরাপত্তা আজ হুমকির সম্মুখীন; সমগ্র বিশ্বের অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে, বিশ্বব্যাপী ছেয়ে গেছে দারিদ্রতা আর বেকারত্ব সমস্যা। এমতবস্তায় কৃষি, শিল্প-কলকারখানায় ও সেবা ক্ষেত্রসমূহে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ছাড়া গত্যান্তর নাই।
কৃষি পৃথিবীর সবচেয়ে প্রাচীনতম শিল্প। সবার জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে, কৃষি ক্ষেত্রে আইসিটি সহ জুতসই প্রযুক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। সাথে সাথে ‘গ্রীন প্রোডাক্টিভিটি ‘ এর বিষয়টাও বাস্তবায়ন করতে হবে। বর্তমান বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে জাতীয় উৎপাদনশীলতা দিবস এর প্রতিপাদ্য যথার্থই নির্বাচন করে হয়েছে — –‘জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে উৎপাদনশীলতা’। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা গড়া। কৃষিতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির নিমিত্তে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেশ মোতাবেক দেশের প্রতিটি ইঞ্চি খালি জমিতে শস্য ফলন করতে হবে এবং প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষতা প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে কাজ করতে হবে।
করোনা বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাবে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এবং কাজকর্মে অনেক পরিবর্তন এসেছে। কম্পিউটার টেকনোলজির সাথে আমরা খাপ খাইয়ে নিচ্ছি; অনলাইন ব্যবসা -বাণিজ্য তথা শিক্ষা ব্যবস্থা অনেকটাই ক্লাউড কম্পিউটিং এর আওতায় চলে এসেছে।
জাপান-বেসড এশিয়ান প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এ পি ও) ইতোমধ্যে বাংলাদেশের জন্য উৎপাদনশীলতা উন্নয়নের নিমিত্ত একটি ‘জাতীয় উৎপাদনশীলতা মাস্টার প্ল্যান ২ ০ ২ ১ – ২ ০ ৩ ০’ তৈরী করে বাংলাদেশ সরকারকে হস্তান্তর করেছ। এটি একটি ‘অয়েল-ডিফাইনেড’ প্ল্যান যা সাফল্যতার সাথে বাস্তবায়নের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ন্যাশনাল প্রোডাক্টিভিটি অর্গানাইজেশন (এন পি ও) কে আধুনিকায়ন করতে হবে।
আমার বিশ্বাস, সবার আন্তরিক সহযোগিতা ও আত্মনিবেদিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রজ্ঞাময় নেতৃত্বে বাংলাদেশের সকল ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে এবং আমরা অচিরেই জাতির পিতার গোল্ডেন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হবো।
(লেখক: প্রফেসর, শের-এ-বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ও , সদস্য, এপি ও সোসাইটি , বাংলাদেশ। ই-মেইল : prof_haque@hotmail.com)