জাতিসংঘ প্রস্তাব ও দিল্লীর প্রতিশ্রুতির মারাত্মক লঙ্গন -মাও. নেজামী

ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী ভারত অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিল করার সমালোচনা করে বলেছেন যে, ভারতের এই পদক্ষেপ গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও সাধারণ পরিষদে গৃহিত প্রস্তাব এবং ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহেরলাল নেহরু কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে প্রদত্ত প্রতিশ্রতির মারাত্মক লঙ্গন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, প্রমাণীত হয়, চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা ভারতের নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহেরলাল নেহরু পাকিস্তানের তদানিন্তন প্রধান মন্ত্রীর কাছে ১৯৪৭ সনের ২৭, ২৮ ও ৩১ অক্টোবর পাঠানো পৃথক পৃথক তারবার্তায় এবং ৮ ও ২১ নভেম্বর এক পত্রে গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীর বিরোধ মিমাংসার প্রতিশ্রুতি দেন। নেহরু ১৯৪৭ সনের ২নভেম্বর অল ইন্ডিয়া রেডিওতে জাতির উদ্যেশে বেতার ভাষণে ও ২৫ নভেম্বর ভারতীয় গণপরিষদে প্রদত্ত বিবৃতি, ১৯৫০ সনের ১৬ আগষ্ট জাতিসংঘে নিযুক্ত পাক-ভারত প্রদিনিধিদের কাছে তারবার্তা, ১৯৫১ সনের ১৬ জানুয়ারী লন্ডনে প্রেস কন্ফারেন্সে ও ১৮ জানুয়ারী বিবৃতি(লন্ডন), ১২ ফেব্রুয়ারী ভারতীয় পার্লামেন্টে বিবৃতি, ৬ জুলাই অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি ও ৯ জুলাই নতুন দিল্লীতে বিবৃতি,, ১৯৫২ সনের ২ জানুয়ারী কলকাতা অমৃতবাজার পত্রিকায় বিবৃতি, ২৬ জুন ও ৭ আগষ্ট ভারতীয় পার্লামেন্টে বিবৃতি, ১৯৫৩ সনের ২০ আগষ্ট পাক-ভারত প্রধানমন্ত্রীদ্বয়ের যুক্ত ইশতেহার ও ১ মে বিবৃতি, ১৯৫৪ সনের ১৮ মে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ষ্টেটসে এবং ১৯৫৫ সনের ৩১ মার্চ ভারতীয় পার্লামেন্টে প্রদত্ত ভাষণে গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন পন্ডিত জওহেরলাল নেহরু। তাছাড়া গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ দেয়ার জন্যে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (৫ জানুয়ারী, ১৯৪৯) ও সাধারণ পরিষদে বিভিন্ন সময়ে প্রস্তাব গৃহিত হয়।
তিনি বলেন, ভারত অধিকৃত জম্মও কাশ্মীর এখন পৃথিবীর সার্বধিক সৈন্য কবলিত এলাকা। প্রতি ৬ জন কাশ্মীরির জন্য একজন ভারতীয় সৈন্য রয়েছে। নিয়মিত ৬ লাখ ও অনিয়মিত ১ লাখ মিলে কাশ্মীরকে পদানত করে রাখার জন্যে ভারত প্রায় ৭ লাখ সৈন্য জম্ম ও কাশ্মীরে মোতায়েন করেছে। । ইদানিং আরো সৈন্য সেখানে প্রেরণ করা হয়েছ্ ে।
তিনি বলেন, নারকীয় তান্ডব চালিয়ে, রাজনৈতিক ধুম্রজাল সৃষ্টি করে ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে অঘোষিত যুদ্ধে রূপান্তরিত করে নতুন দিল্লী কোনদিন কাশ্মীরকে ভারতভূক্তির অবৈধ আস্ফালন ও ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে পারবে না।
তিনি কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগণের সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্যে পারস্পরিক ক্ষুদ্র মতবেদ ভুলে বৃহত্তর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মুসলিম বিশ্বের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান ।
মাওলানা মিজানুর রহমান, প্রচার সম্পাদক