পার্সোনাল সাইকোপ্যাথি টেনডেন্সি থেকে জাতিকে বাচাতে হবে

মোতাহার হোসেন
ইদানীং পত্রিকার পাতা খুললেই দেখবেন, শিশু ধর্ষণের খবর, প্রতিবন্ধী ধর্ষণের খবর, চার সন্তানের জননী ধর্ষণের খবর। এসব খবর বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়; মানসিক বিকারগ্রস্থ কিছু অসুস্থ নরপশুর বিকৃত লালসা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা দুগ্ধপোষ্য শিশু, মানষিক বা শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু, কিশোরী কিংবা চার সন্তানের জননী ; ৬ থেকে ৬০ বছরের নারী, কেউই না।এ ধর্ষকের তালিকায় যেমনি আছে ট্রাক বাসের ড্রাইভার হেলপার তেমনি স্কুল শিক্ষক, প্রাইভেট টিউটর, নিকট আন্তীয়। উঠতি বয়সী কিশোর থেকে বয়স্ক লোক পর্যন্ত আছে এ তালিকায়। এমনি এক বিভীষিকাময় ভয়াল পরিস্থিতি বিরাজ করছে দেশব্যাপী।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের একটি জরিপে দেখা যায় গত বছর ১২মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৫৭১টি,এর মধ্যে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৯৪টি,প্রতিবন্ধী ২৮ আর ৬০ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের হিসাব অনুযায়ী চলতি বছর প্রথম মাসেই ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা এবং নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ২৯৮ টি। গত বছর মানে ২০১৮ সালে এ রুপ ঘটনা ঘটেছে ৯১৮ টি।
মনোবিজ্ঞানীদের মতে এ রুপ বিভীষিকাময় অবস্থার জন্য দায়ী কিছু বিকারগস্ত, মানষিক ভাবে অসুস্থ নরপশু। এ রোগের নাম দিয়েছেন পার্সোনাল সাইকোপ্যাথি টেনডেন্সি। যুবক কিশোর, মধ্যবয়স্ক এমনকি বয়স্ক লোক ও এ রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এর কারন হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন, আইনশৃংখলার অবনতি, বিচারহীনতা, বিচারের দীর্ঘসুত্রিতা,নৈতিক অবক্ষয় ও আইনের অপপ্রয়োগ এবং আইন প্রয়োগে আইনী জটিলতা।
বর্তমান সরকার ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত করনে সর্বোচ্চ শান্তি মৃত্যুদন্ড সহ যুগান্তকারী কিছু আইন প্রনয়ণ করেছেন। কিন্তু আইনপ্রয়োগে ফাকফোকর গুলো এখনো দূর হয়নি। এই আইনের ফাঁক দিয়ে অপরাধীরে সহজেই বেড়িয়ে যাচ্ছে। আবার অপরাধ করছে, দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
একটি বেসরকারি সংস্থার জরিপ অনুযায়ী, দেশে ধর্ষণের মামলার বিচার হচ্ছে মাত্র ৩ থেকে ৪% এর। অসংখ্য মামলা ঝুলে আছে বছরের পর বছর। ভিকটিম আশা হারাচ্ছেন, কোন কোন ক্ষেত্রে আত্নহত্যাও করছেন। এ অবস্থায়, এ বিষয়কে দিতে হবে সর্বোচ্চ গুরুত্ব, ভাবতে হবে, নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ।
প্রথমত: আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে জটিলতা দূর করতে হবে, আইনের ফাঁক ফোকর বন্ধ করতে হবে, চিহ্নিত করতে হবে সেসব কারণ সমূহ যে সব কারণে আইনপ্রয়োগ কার্যকরী হচ্ছেনা। এবং চিহ্নিত করতে হবে সেসব কারণ সমূহ যেসব কারনে এক শ্রেণীর মানুষ মানষিক বিকারগ্রস্থ হচ্ছে, পার্সোনাল সাইকোপ্যাথি টেনডেন্সিতে ভুগছে।এ রোগ সারানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।সর্বোপরি সামাজিক সচেতনতা
বাড়াতে হবে। তবেই যদি এ অভিশাপ থেকে জাতি মুক্তি পায়।