ভুয়া ভোটের ভুয়া নির্বাচন – সিপিবি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এক তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘ভুয়া ভোটের ভুয়া নির্বাচন’ বলে অভিহিত করে বলেছে। এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচনের পূর্বনির্ধারিত রায় জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।সিপিবির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম ও সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম আজ ৩০ ডিসেম্বর দুপুরে এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ভুয়া বিজয়’ নিশ্চিত করার জন্য নানা ধরনের প্রহসন ও কারচুপির বলয় আগেই তৈরি করেছিল শাসক দল। এর মধ্যদিয়ে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ন্যূনতম ভিত্তিকে এভাবে বলি দেওয়ার ব্যবস্থা তারা আগেই করে রেখেছিল।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনের নামে যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণভাবে একটি ‘ভুয়া নির্বাচন’। যাদেরকে এভাবে নির্বাচিত বলে ঘোষণা করার আয়োজন করা হয়েছে তারা নিজেদেরকে কোনোমতেই জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি বলে দাবি করতে পারবে না। জনগণ তাদেরকে ‘ভুয়া প্রতিনিধি’ বলেই বিবেচনা করবে। ‘ভুয়া প্রতিনিধি’দের নিয়ে গঠিত সংসদও ‘জনপ্রতিনিধিদের সংসদে’র মর্যাদা দাবি করতে পারবে না। সেটিকে জনগণ ‘ভুয়া সংসদ’ হিসেবেই গণ্য করবে। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ন্যূনতম ভিত্তিকে এর দ্বারা বলি দেওয়া হবে।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শুরু থেকেই সরকার প্রতিপক্ষের প্রার্থী ও কর্মীদের ওপর সন্ত্রাস চালিয়ে, প্রতিপক্ষের প্রচারণা কাজে হামলা চালিয়ে এবং জনগণের মধ্যে নানা গুজব ছড়িয়ে সর্বত্র এক শ্বাসরুদ্ধকর ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে কার্যত একটি একতরফা নির্বাচনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে এই উদ্দেশ্য পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করা হয়েছিল। ‘ভুয়া বিজয়’ নিশ্চিত করার জন্য নানা ধরনের প্রহসন ও কারচুপির বলয় তৈরি করেছিল।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, ভোট শুরু হওয়ার ১ ঘণ্টার মধ্যে বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া সুনির্দিষ্ট খবরাখবর থেকে জানা গেছে যে, এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে অধিকাংশ কেন্দ্রে আগের রাতেই ব্যালট সিল মেরে রাখা হয়েছিল। নির্বাচন শুরু হওয়ার পরেও, নামমাত্র ভোটারের উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে প্রতিপক্ষের এজেন্টদেরকে জোর করে বের করে দিয়ে এবং আগ্রহী ভোটারদেরকে হুমকি দিয়ে বিতাড়িত করে, প্রকাশ্যে সিল মেরে ‘ভুয়া ভোট’ বাক্সে ঢোকানো হচ্ছে বলে চতুর্দিক থেকে তথ্য আসছে।
এই অবস্থা এখনও অব্যাহত আছে। সিপিবি ও বাম জোটের প্রার্থীদের সব এলাকায় অবাধ চলাচলের সুযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, হামলা করা হয়েছে। প্রায় সব এলাকায় এজেন্টদের বের দেওয়া হয়েছে। সমর্থক দেখলে ভোটদানে বাধা দেওয়া হয়েছে। এধরনের শতাধিক অভিযোগ ইতিমধ্যে স্থানীয়ভাবে সংশ্লিষ্টদের কাছে ও নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের ওপর পুলিশ ও সরকারি দলের হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি হামলা থেকে অন্যান্য বিরোধী প্রার্থী, প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্টও রেহাই পাননি।
প্রহসনের এ নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচনের পূর্বনির্ধারিত রায় জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে।
(৩০ ডিসেম্বর ২০১৮)